বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জ (কাজিপুর) থেকে মোহাম্মদ আশরাফুলঃ— সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ইট ভাটাগুলোতে আবাদী জমির উপরের অংশের মাটির ব্যাপক চাহিদা থাকায় ওই মাটি কাটার উৎসব চলছে। ফলে জমির উর্বরতা শক্তি ও উৎপাদন ক্ষমতা দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। কাজিপুরে ৮-১০টি গ্রামে এক শ্রেণীর লোকদের প্রলোভনে এই আবাদি জমির মালিকরা সামান্য টাকার বিনিময়ে তাদের জমির উপরের অংশের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে ইটভাটার মিলিকদের কাছে। শীত মৌসুমে শুরু হওয়া এ মাটি কাটার উৎসব অব্যাহত রয়েছে।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম জানান, ফসলের প্রধান খাদ্য নাইট্রোজেন, পটাশ, সালফার, জিংক, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনসহ অর্গানিক উপাদানের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে এই জমিগুলোর উপরি অংশের মাটি কেটে ফেলায়। এতে জমি যে উর্বরতা হারাচ্ছে তা পূরণ হতে কমপক্ষে ৫ বছর সময় লাগবে। উপজেলার সিমান্ত বাজার, গান্ধাইল ও সোনামুখী গ্রামে তিনটি ইটভাটা এলাকায় কয়েকটি গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমির উপরের অংশের মাটি কাটার হিড়িক চলছে। ওই তিনটি ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য এ মাটি সববরাহ করা হচ্ছে। বিশেষ করে, কৃষকের দরিদ্রতা ও অজ্ঞতাকে পুঁজি করে মাটি সংগ্রহকারী ও দালালরা অর্থের লোভ দেখিয়ে আবাদী জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। যে টাকা পাচ্ছেন ওই জমির মালিকরা তাতে কোন প্রকারে লাভবান হতে পারছেন না তারা বরং অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। জমিতে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে তাদের। জানা যায়, প্রতিদিন ওই সব অঞ্চল থেকে শত শত ট্রাক্টর মাটি ইটভাটা গুলোতে যায়। এ ক্ষেত্রে আবাদী জমির মালিকরা প্রতি ট্রাক্টর মাটি ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। ওই টাকা থেকে দালাল পাচ্ছে প্রতি ট্রাক্টর বাবদ ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এছাড়া কোনো কোনো গ্রামের জমির মালিকরা এককালীন নগদ টাকা পেয়ে জমির প্রায় দুই আড়াই ফুট গভীরতার মাটি ইটভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করছেন। অথচ জমির মাটির প্রধান উপাদান নষ্ট হয়ে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এ বিষয়টি জমির মালিক বা কৃষকরা বুঝতে পারছেন না। কৃষিবিদরা মনে করছেন ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনি উচিত জমির মালিক বা কৃষকদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া। আর সচেতন মহল বলছেন, দ্রুত ফসলি জমির উপরি অংশের মাটি কাটার হিড়িক রোধ করতে হবে নতুবা ধ্বংসের মুখে পড়বে কৃষক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে ঘার্তিতে পড়বে দেশ।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply